June 11, 2025

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসূচি প্রণয়ন

তৃণমূল পর্যায়ের উদ্যোগের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকারের অগ্রগতি তবেই সফল হবে যখন তাঁদের নিজেদের কণ্ঠস্বর এবং প্রজ্ঞাকে সেইসব উদ্যোগের কেন্দ্রে রাখা হবে।

READ THIS ARTICLE IN

8 min read
This is the final article in an 8-part series supported by the Forbes Foundation. The series is focused on changing mindsets to build awareness, increase sensitisation, and enable inclusion and access for persons with disabilities, while platforming practitioners and nonprofit leaders working in the space of disability.

View the entire series here.


সামাজিক কলঙ্ক, বৈষম্য, নথিপত্রের ত্রুটি, এবং অধিগম্যতা, চাকরির সুযোগ, স্বাস্থ্য পরিষেবার সুবিধা, ও শিক্ষার অভাব সমাজে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা যে সব প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন তার মধ্যে মাত্র কয়েকটি। তৃণমূল স্তরে, প্রতিবন্ধকতাকে ঘিরে সামাজিক কুসংস্কার এবং মৌলিক পরিষেবাগুলিতে সীমিত অধিকার এই সমস্যাগুলিকে আরও বাড়িয়ে তোলে, যার ফলে এই সমস্ত ব্যক্তি এবং তাঁদের পরিবারগুলি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। অতএব, তাঁদের চাহিদাগুলি পূরণ করা, অধিকারসমূহের স্বীকৃতি দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরি।

“একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি যখন চাকরি পান, তখন মানসিকতার পরিবর্তনের একটি ধারাবাহিকতা শুরু হয় – প্রথমে পারিবারিক স্তরে এবং শেষে গ্রাম এবং ব্লক স্তরে। পরিবারগুলি প্রায়শই তাদের সন্তানদের যত্ন নেওয়ার বিষয়ে চিন্তিত থাকে, কারণ চিকিৎসার খরচ, সহায়ক প্রযুক্তির ব্যায়বাহুল্য এবং সহায়তার অভাব তাঁদের সম্পদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু [চাকরির মাধ্যমে] আয়ের একটা উপায় তৈরি হলে তার সঙ্গে সঙ্গে এই ধারণাটাও পালটায় যে একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি চাকরি করতে পারেন না বা তাঁকে চাকরি দেওয়াও উচিত না,” বলছেন রাজস্থানের করাউলি জেলার ইয়ুথফরজবস ফাউন্ডেশনের (Youth4Jobs Foundation) প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোহাম্মদ শাহেদ।

ইয়ুথফরজবস প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের উপর জোর দেওয়ার মাধ্যমে তাঁদের মধ্যে স্বাবলম্বিতা গড়ে তুলতে চায়। বর্তমানে এদের গ্রাসরুট একাডেমি প্রোগ্রামটি ভারতের গ্রামাঞ্চলে শরীর, দৃষ্টি, শ্রবণ এবং বাক-সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা আছে এমন তরুণদের জন্য বিশেষভাবে কাজ করে। সংস্থার কাজের মূল ক্ষেত্রগুলির মধ্যে রয়েছে নথিপত্র তৈরিতে সহায়তা, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং নেতৃত্বদানের ক্ষমতার বিকাশ।

ইয়ুথফরজবস দলের সদস্যরা নিজেদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কীভাবে সংগঠনগুলি তৃণমূল স্তরে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অনন্য প্রতিকূলতাগুলি মোকাবিলা করার জন্য অর্থবহ কর্মসূচি তৈরি করতে পারে সে সম্পর্কে তাঁদের চিন্তাভাবনা ভাগ করে নিলেন।

red, orange, and yellow coloured powder--persons with disability
একজন প্রতিবন্ধী মানুষ যখন চাকরি পান, তখন মানসিকতার পরিবর্তনের একটি ধারাবাহিকতা শুরু হয়। | ছবি সৌজন্যে: আনস্প্ল্যাশ

প্রতিবন্ধীদের দ্বারা, প্রতিবন্ধীদের জন্য

প্রতিবন্ধকতাকে দান এবং কল্যাণবিধানের আতসকাচ দিয়ে দেখার দৃষ্টিকোণ থেকে সরে আসার লক্ষ্যে জাতিসংঘ স্লোগান গ্রহণ করেছে, ‘আমাদের ছেড়ে আমাদের বিষয়ক কিছু নয়’। এর অর্থ হল, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাহিদা, কল্যাণ এবং অধিকারকে প্রভাবিত করে এমন সিদ্ধান্ত, নীতি বা পদক্ষেপ তাঁদের প্রত্যক্ষ যোগদান এবং মতামত ছাড়া নেওয়া উচিত নয়, কারণ এগুলি তাঁদের চেয়ে ভালো আর কেউ বোঝে না।

ইউথফরজবস-এর প্রতিষ্ঠাতা মীরা শেনয় জানালেন যে গ্রাসরুট একাডেমি কর্মসূচি এই নীতিই অনুসরণ করে। “আমরা প্রতিবন্ধী তরুণদের এই প্রোগ্রামের নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়ে সক্ষম করে তোলার সম্ভাবনা দেখেছি কারণ তাঁদের ভিতর নিজেদের সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করার তীব্র ইচ্ছা এবং আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। আমরা তাঁদের নাম দিয়েছি দিব্যাঙ্গ মিত্র (প্রতিবন্ধীদের বন্ধু)।” এই পদের উদ্দ্যেশ্য কেবলমাত্র সহায়তা প্রদান নয়, বরং এই তরুণদের তাঁদের গ্রামের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সঙ্গী এবং সমর্থক হিসেবে স্থাপন করাও। তাঁরা পরামর্শ এবং সমাধান দেওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত কারণ তাঁরা অন্য প্রতিবন্ধী মানুষের যাপনের বাস্তবতাগুলি বুঝতে পারেন।”

দিব্যাঙ্গ মিত্রের উপস্থিতির কারণে গেঁথে বসে থাকা সামাজিক রীতিনীতিগুলি দোলাচলের মুখে পড়ে। তাঁরা এমন সব এলাকা থেকে আসেন ও কাজ করেন যেখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রায়শই বাড়ির ভিতর আবদ্ধ করে রাখা হয়, তাঁদের শিক্ষায় খুব কম কিংবা কোনও বিনিয়োগই করা হয় না। এর বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যেমন কাছাকাছি কোনও স্কুলের অভাব, অধিগম্যতার সমস্যা, বিশেষজ্ঞ শিক্ষকের অভাব, নাগরিক জীবন সংক্রান্ত বিষয়ে অংশগ্রহণ থেকে বাদ পড়া এবং আরও অনেক কিছু। এমন একটি বিশ্বাসও রয়েছে যে তারা কাজ করতে অক্ষম। প্রহ্লাদ বেনিওয়াল, একজন দিব্যাঙ্গ মিত্র, বলছেন, “আমরা ক্রমাগত এমন মন্তব্য শুনি যা আমাদের আত্মবিশ্বাসকে প্রভাবিত করে, যার ফলে আমরা নিজেরাই নিজেরদের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে থাকি । কিন্তু এই কর্মসূচিতে যোগদানের পর আমি বুঝতে পেরেছি যে প্রতিবন্ধীদের অধিকারের পক্ষে কথা বলার জন্য আমাদের কণ্ঠস্বর গুরুত্বপূর্ণ। আমার গ্রামের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা আমার উপর বিশ্বাস করেন এবং আমি কী করতে পারি তা দেখে তাঁরা কাজ করার জন্য অনুপ্রাণিত হন।“

এইভাবে সম্প্রদায়ের কণ্ঠস্বরই এই কর্মসূচির ভিত তৈরি করে। ছয়টি রাজ্য এবং 25 টি জেলায় এই কর্মসূচি রূপায়ণের অভিজ্ঞতা ইয়ুথফরজবসকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কর্মসূচি তৈরির কয়েকটি মূল নীতি প্রদান করেছে:

1. প্রয়োজনের ভিত্তিতে রূপরেখা তৈরি করা

বয়স এবং শিক্ষার স্তর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রয়োজনগুলি বুঝতে সাহায্য করে। গ্রাসরুটস একাডেমি কর্মসূচির রাজ্যস্তরের প্রধান মেহতাব সিং ব্যাখ্যা করলেন, “প্রথমে আমরা কোনও এলাকার সকল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করার জন্য ঘরে ঘরে সমীক্ষা করি। যদি তাদের বয়স 18 বছরের কম হয়, তাহলে আমরা মূল্যায়ন করে দেখি যে আমরা তাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে কীভাবে সহায়তা করতে পারি, প্রয়োজনে এলাকার স্কুলগুলির সাথে সংযোগ স্থাপন করে থাকি। 18 বছরের বেশি বয়সীদের জন্য আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হল কর্মসংস্থান, যা তাঁদের প্রতিবন্ধকতার ধরণ এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাঁরা কী দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তার উপর নির্ভর করে।” উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে, প্রায়শই অগ্রাধিকার দেওয়া হয় তাঁদের যোগ্যতার সাথে মেলে এমন একটি কর্মক্ষেত্রে চাকরি নিশ্চিত করার উপর।

শাহেদ আরও উল্লেখ করলেন যে মানুষ তাদের আগ্রহের ভিত্তিতে স্বনিযুক্তির সুযোগের সাথেও যুক্ত হন। এগুলির মধ্যে রয়েছে মুদির দোকান, চাক্কি (শস্য পেষাই কল), ফটোগ্রাফি ষ্টুডিও, বুটিক ইত্যাদির ক্ষুদ্র উদ্যোগ। এগুলি তাঁদেরকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলে, যা সময়ের সাথে সাথে তাঁদের আয় বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে,তাঁদেরকে কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদানকারী সরকারি প্রকল্পগুলির সাথেও পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। মেহতাব একজন চলাফেরায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তির উদাহরণ দিলেন, যাঁকে এই সংস্থা সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে একটি ই-রিকশা কিনতে সাহায্য করেছিল। সেই ব্যক্তি নিয়মিত আয়ের জন্য রিকশাটি ভাড়াতে খাটান।

এটাও হতে পারে যে কোনও ব্যক্তি এই প্রোগ্রামে প্রদত্ত কোনও বিষয়েই আগ্রহী নন। সেই সব ক্ষেত্রে, তাঁদের সহায়তা করার বিকল্প উপায় চিহ্নিত করা দরকার। মেহতাব একটি উদাহরণ দিলেন, “একজন তরুণী ছিলেন যাঁর চলাফেরা-সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা ছিল এবং তিনি প্রোগ্রাম প্রদত্ত কাজগুলিতে আগ্রহী ছিলেন না। কিন্তু তিনি খেলাধুলোয় আগ্রহী ছিলেন, তাই আমরা স্থানীয় অ্যাথলেটিক্স দলের সাথে যোগাযোগ করি। অবশেষে তিনি রাজ্যস্তরের প্যারালিম্পিক দলে যোগ দিতে সক্ষম হন, বেশ কয়েকটি পুরস্কারও জিতেছিলেন।”

2. সরকারি প্রকল্প এবং প্রশাসনের সাথে সংযুক্ত করা

কর্মসংস্থান বা শিক্ষার পাশাপাশি, সরকারি প্রকল্পগুলি সম্পর্কে তথ্য দেওয়া এবং সেই ব্যক্তিদের সেগুলির সুবিধা গ্রহণে সাহায্য করাও ইউথফরজবস-কে জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভরসার জায়গা তৈরি করতে সাহায্য করেছে। প্রায়শই, তাঁদের নাম, ঠিকানা, পিতা বা স্বামীর নাম এবং জন্ম তারিখের মতো তথ্য তাঁদের আধার কার্ড, প্যান কার্ড বা অন্যান্য সরকারি নথিতে ভুলভাবে লিপিবদ্ধ থাকে। সংশ্লিষ্ট মোবাইল নম্বর বা ইমেল আইডি সংশোধন করতেও তাঁরা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। শাহেদ জানালেন, তাঁর অভিজ্ঞতায় তিনি দেখেছেন, অনেকেই অনন্য প্রতিবন্ধী আইডি (Unique Disability ID – UDID) কার্ড বা প্রতিবন্ধী শংসাপত্র সম্পর্কে অবগত নন, যা সরকারি প্রকল্পগুলির সুবিধা গ্রহণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। UDID অর্জন প্রক্রিয়ার ডিজিটাইজেশন পদ্ধতি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য জটিলতার আরও একটি স্তর যুক্ত করেছে

“আমরা এটি এবং অন্যান্য সরকারি প্রকল্পগুলি সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করি এবং তাঁদের নথিপত্রগুলি ঠিকভাবে গোছাতে সহায়তা করি। আমরা এরকম কোনও ব্যক্তিকে এবং তাঁর পরিবারের কোনও একজন সদস্যকে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে নিয়ে যাই এবং তাঁদেরকে এই প্রক্রিয়াটির ভিতর দিয়ে নিয়ে যাই যাতে ভবিষ্যতে তাঁরা আর কোনও সমস্যার সম্মুখীন না হন।” ফিল্ডে নিযুক্ত দলকে জেলা, ব্লক এবং পঞ্চায়েত কর্মকর্তাদের মতো জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি আশা-কর্মী (ASHA), অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের সাথেও যোগাযোগ রাখতে হয়। এর ফলে তাঁরা যেকোনো এলাকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছাতে এবং তাঁদের সহায়ক প্রযুক্তি (যেমন, হুইলচেয়ার এবং ট্যাবলেট) বিতরণে সহায়তা করতে সম্ভব হন।

3. সংশ্লিষ্ট হিতাধিকারীগণের (স্টেকহোল্ডারদের) মধ্যে সংবেদনশীলতা তৈরি করা

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সাথে কাজ করে এমন কোনও দলকে এই জনগোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্যগুলি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত যাতে তারা কার্যক্ষেত্রের সমস্যাগুলির কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারে। মীরা বলছেন, “প্রশিক্ষণের প্রথম বছরে আমরা এমন কিছু অধ্যায় রেখেছিলাম যা আমাদের কাছে তখন গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু শীঘ্রই, আমরা বিষয়বস্তুতে খামতি দেখতে শুরু করি। পরের বছরগুলিতে আমরা জনগোষ্ঠীর সাথে আলোচনা করে,তাঁদের দ্বারা চিহ্নিত প্রয়োজনগুলির উপর ভিত্তি করে নতুন প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি করেছি। আজ, গোষ্ঠীর মানুষের সাথে পরামর্শের মাধ্যমে সম্পূর্ণ পাঠ্যক্রম পরিমার্জন করা হয়েছে।” এর একটি উদাহরণ হল বেতনভোগী কাজ এবং দৈনিক মজুরি শ্রমের মধ্যে পার্থক্য পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা। যেহেতু তাঁরা যাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তাঁদের অনেকেই আগে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজে নিযুক্ত ছিলেন না বা কেবল অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করেছেন, তাই এই বিষয়বস্তু প্রভিডেন্ট ফান্ড, সুবিধা ইত্যাদির জন্য অর্থ কেটে নেওয়ার মতো দিকগুলি স্পষ্ট করতে সাহায্য করেছে।

অফিসের কাজে যোগ দিতে ইচ্ছুক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কোম্পানিগুলিকে তাঁদের সংস্পর্শে নিয়ে আসা এবং তাদের সংবেদনশীল করা প্রয়োজন। শাহেদ ব্যাখ্যা করেন, “যেসব নিয়োগকর্তাদের সঙ্গে আমরা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের যোগাযোগ করাই, তাঁদের সাথে আলাদা করে কথা বলা এবং তাঁদের মধ্যে সংবেদনশীলতা তৈরি করা জরুরি। আমরা ক্রমাগত স্থানীয় বাজার পরীক্ষা করি এবং বর্তমান এবং সম্ভাব্য নিয়োগকর্তাদের আমাদের কর্মসূচি সম্পর্কে অবহিত করি।” এইভাবে সংস্থাটি প্রতিবন্ধী কর্মপ্রার্থী এবং নিয়োগকর্তার মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে।

কিন্তু একজন প্রার্থীকে চাকরিতে নিয়োগের পরই কাজ শেষ হয়ে যায় না। মেহতাব ব্যাখ্যা করেন, “আমরা একজন শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে একটি পেট্রোল পাম্পে চাকরি পেতে সাহায্য করেছিলাম। আমরা যখন তাঁর কাজের পারদর্শিতার পর্যালোচনা করছিলাম, তখন যে অন্যান্য কর্মচারীরা অভিযোগ করেন যে তিনি দুপুরের বিরতির সময় কাউকে না জানিয়ে কয়েক ঘন্টার জন্য অদৃশ্য হয়ে যেতেন। আরও অনুসন্ধানের পর, আমরা জানতে পারি যে এই সময় তিনি প্রার্থনা করার জন্য অন্য কোথাও যাচ্ছিলেন। একবার এটি স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর আর কোনও সমস্যা হয়নি।” কর্মচারীদের জানা দরকার ছিল কী ঘটছে, কিন্তু যেহেতু প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এমনভাবে তাঁদের সাথে কথোপকথন চেষ্টা করেন যার সাথে তাঁরা পরিচিত ছিলেন না , তাই একটি ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছিল। এই ধরনের ব্যবধান পূরণ করা প্রতিষ্ঠানের কাজের একটি একান্ত প্রয়োজনীয় দিক।

4. কর্মসূচিতে পরিবারগুলিকে যুক্ত করা

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পরিবারগুলি প্রায়শই উদ্বেগ, পক্ষপাত, অথবা পূর্ববর্তী প্রচেষ্টার অকার্যকরতার মতো কারণগুলির কারণে তাদের জন্য তৈরি কর্মসূচি সম্পর্কে উদ্বিগ্ন থাকে। প্রতিবন্ধী মহিলাদের প্রায়শই ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হয় না – শিক্ষা বা কর্মসংস্থানের জন্যও নয়। প্রহ্লাদ ব্যাখ্যা করেন, “অভিভাবকরা তাঁদের মেয়েদের নিয়ে চিন্তিত থাকেন এবং জিজ্ঞাসা করেন যে তাঁরা যদি কোনও সমস্যার সম্মুখীন হয় তাহলে কী হবে। আমরা তাঁদের নিজেদের কাহিনি ভাগ করে নেওয়ার জন্য অন্যান্য প্রতিবন্ধী মহিলাদের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিই। কিছু ক্ষেত্রে, আমরা তাঁদের পরিবারের অন্য সদস্যদেরও একই জায়গায় কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে সাহায্য করি যাতে তাঁরা তাঁদের সাথে যাওয়া আসা করতে পারেন।”

মেহতাব উল্লেখ করেছেন যে কখনও কখনও প্রতিবন্ধী মহিলাদের অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়া হয়। এই সব ক্ষেত্রে, সংস্থাটি একই জায়গায় উক্ত মহিলা এবং তাঁর স্বামী উভয়ের কর্মসংস্থানের উপায় খোঁজার চেষ্টা করে।

5. চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে মানিয়ে নেওয়া

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য, বিশেষ করে তৃণমূল স্তরে এবং বিভিন্ন হিতাধিকারীগণের সাথে নিয়ে কর্মসূচি পরিচালনা করা কঠিন কাজ। উদাহরণস্বরূপ, নিয়োগকর্তাদের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগের জন্য রাজি করানো কঠিন হতে পারে। এটি কাজের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। মীরা জানাচ্ছেন, এই সমস্যার সমাধান গোষ্ঠীর ভেতর থেকেই এসেছে। “আমাদের একটি সভায়, একজন দিব্যাঙ্গ-মিত্র জানান যে তিনি একজন স্থানীয় উদ্যোগপতি ও তাঁর প্রতিবন্ধী কর্মচারীর বয়ান রেকর্ড করেছেন। তারপর তিনি সেই রেকর্ডিং এলাকার অন্যান্য সম্ভাব্য নিয়োগকর্তাদের দেখান, যাতে তাঁদের আমাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে রাজি করাতে অনেকটাই সুবিধা হয়েছিল।“ অন্যান্য দিব্যাঙ্গ –মিত্ররাও তাঁদের নিজ নিজ এলাকায় এই কৌশলটি প্রয়োগ করতে সক্ষম হন।

জনগোষ্ঠী এবং সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে ফলপ্রসূ কথাবার্তা সহজতর করার চেষ্টাতেও বাধা দেখা দিতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করার কাজ সময়সাপেক্ষ হতে পারে, প্রত্যাখ্যানেরও জোরালো সম্ভাবনা থাকে । রাজস্থানের ভরতপুর জেলায়, অমর সিং নামে একজন দিব্যাঙ্গ -মিত্র মুখ্যমন্ত্রী দিব্যাঙ্গ স্কুটি যোজনার অধীনে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য অধিকার নিশ্চিত করতে সমস্যায় পড়ছিলেন। এর সমাধান করতে, তিনি সেই জেলার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের একটি বিশাল দলকে একত্রিত করেন এবং তাঁদের প্রয়োজনগুলি উপস্থাপন করার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সাথে একটি বৈঠকের আয়োজন করেন। অবশেষে, তিনি কেবল 50 টি স্কুটার নিশ্চিত করতেই সক্ষম হননি, উপরন্তু রাজস্থানের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য উপদেষ্টা কমিটিতেও মনোনীত হন।

শিক্ষার ভিত্তিতে উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতেও সমস্যা হতে পারে। শাহেদ ব্যাখ্যা করেন, “প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষার স্তর কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে একটি সমস্যা, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়। গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকতে পারে, কিন্তু উচ্চ বিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলি প্রায়শই দূরে অবস্থিত হয়, যেখানে যাতায়াতের সমস্যা একটি গুরুত্বপূর্ণ বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু নিয়োগকর্তারা সাধারণত এমন লোকদের নিয়োগ করতে চান যাঁরা কমপক্ষে দশম শ্রেণি পাস করেছেন।” তাই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য স্ব-নিযুক্তির বিকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এটি নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ যে তাঁদের স্ব-নিযুক্তির পদ্ধতিগুলি যেন একে অপরের সাথে বিরোধপূর্ণ না হয়, যেমন একই পাড়ায় দুটি মুদিরদোকান খোলা। এই ধরনের প্রতিযোগিতা রোধ করার জন্য, একই ধরণের জিনিসের দোকান একের অপরের থেকে কিছুটা দূরত্বে খোলা হয়। একই সাথে এও দেখা হয় যে দোকানটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিটির জন্য অধিগম্য এবং গ্রামবাসীদের আসার জন্য সুবিধাজনক কিনা।

মীরা বলছেন, যেসব ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই অনেক কাজ হয়েছে সেখানে টাকা ঢালা থেকে সংস্থাগুলিকে নিরস্ত করার প্রয়োজন আছে। “সহানুভূতিশীল অর্থদাতা, সরকার এবং অন্যান্য যেসব হিতাধিকারীরা এই কাজে বিশ্বাস রাখেন, তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করাও জরুরি, তাতে কাজটির দীর্ঘমেয়াদী অস্তিত্ব নিশ্চিত হয়,” তিনি বলেন। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, তিনি গোষ্ঠীগত জ্ঞান যে কতটা মূল্যবান তার উপর জোর দিচ্ছেন: “[প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সাথে কাজ করার সময়] সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল এটা স্পষ্টভাবে বোঝা যে আমরা এই কর্মের কর্তা নই, কেবল সহায়তাকারী মাত্র। প্রকৃত পরিবর্তনের কারিগর হলেন সম্প্রদায়ের প্রতিবন্ধী তরুণরা যাঁদের ক্ষমতায়নের জন্য আমাদের বিনিয়োগ করতে হবে। আমাদের কাজের মাধ্যমে আমরা গ্রামীণ সম্প্রদায়ের অর্জিত জ্ঞানের মূল্য শিখেছি। আমাদের সুইগুলি শোনার জন্য সেই নম্রতা থাকা দরকার।”

সিদ্ধার্থ ভাট এই প্রবন্ধে অবদান রেখেছেন।

এই প্রবন্ধটি একটি AI টুল ব্যবহার করে অনুবাদ করা হয়েছে। এটি সম্পাদনা করেছেন নীলাঞ্জন চৌধুরী এবং পরিমার্জন করেছেন দ্যুতি মুখার্জি।

আরও জানুন

  • রাজস্থানে লিঙ্গ সমতা এবং প্রতিবন্ধী অধিকারের জন্য লড়াই করা একজন কর্মীর জীবন সম্পর্কে আরও জানুন।
  • ভারতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য নীতিনির্ধারকদের কাছে পরামর্শ উপস্থাপনকারী এই শ্বেতপত্রটি পড়ুন।

We want IDR to be as much yours as it is ours. Tell us what you want to read.
ABOUT THE AUTHORS
ডেরেক জেভিয়ার-Image
ডেরেক জেভিয়ার

ডেরেক জেভিয়ার আইডিআর-এর একজন সম্পাদকীয় সহযোগী, যেখানে তিনি লেখালেখি, সম্পাদনা এবং বিষয়বস্তু প্রকাশের দায়িত্বে আছেন। তিনি পূর্বে ক্যাকটাস কমিউনিকেশনস এবং ফার্স্টপোস্টে সম্পাদকীয় পদে কাজ করেছেন। তিনি আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিডিয়া স্টাডিজে এমএ এবং মুম্বাইয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞান ও নৃতত্ত্বে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

সৃষ্টি গুপ্তা-Image
সৃষ্টি গুপ্তা

সৃষ্টি গুপ্তা আইডিআর-এর একজন সম্পাদকীয় সহযোগী, যেখানে তিনি ইংরেজি ও হিন্দিতে বিষয়বস্তু লেখা, সম্পাদনা এবং নির্বাচন করার দায়িত্বে আছেন। তিনি পূর্বে স্প্রিংগার নেচারে সম্পাদকীয় পদে কাজ করেছেন।তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং নিচুতলার দৃষ্টিকোণ থেকে উন্নয়ন এবং সামাজিক ন্যায়বিচার নিয়ে গবেষণা করতে আগ্রহী।

COMMENTS
READ NEXT