READ THIS ARTICLE IN
ত্রিপুরার গোমতী জেলায় অবস্থিত আমার গ্রাম কিল্লায় মাদকাসক্তির সমস্যা রয়েছে।গ্রামের তরুণরা হেরোইন, মরফিন এবং ব্রাউন সুগারের নেশায় ভুগছে।এটি কেবল তাদের স্বাস্থ্যের উপরই নয়, তাদের পরিবারের উপরও প্রভাব ফেলছে। তরুণরা অনেকেই মাদকের জন্য সম্পত্তি বিক্রি করে বা বন্ধক রাখে। অনেকে আবার অন্যের সঙ্গে একই সিরিঞ্জ ভাগ করে ব্যবহার করে, যার জেরে এখানে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
2024 সালে আমি জামাতিয়া হোদা-র ছাত্র সংগঠনের সদস্য হই। এটি একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান যারা জামাতিয়া উপজাতির সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং ধর্মীয় বিষয়গুলি পরিচালনা করে। আমাদের জাতির মানুষদের নিয়ে উদ্বেগ থেকে এই ছাত্র সংগঠনের প্রাক্তন ও বর্তমান সদস্যরা মাদক সম্পর্কে সচেতনতা প্রসার এবং যুবসমাজকে পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে একজোট হন। জনজাতি হিসেবে আমরা খুবই ঘনিষ্ঠ, তাই কেউ মাদকাসক্তির সঙ্গে লড়ছে কিনা তার খবর রাখা আমাদের পক্ষে সহজ। হাতে তথ্য এলে আমরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে মাদকাসক্ত ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলি।
কাজটা সবসময় সহজ নয়। অনেক পরিবারই এটা মেনে নিতে পারে না যে তাদের কাছের মানুষটি মাদকাসক্ত। তারা উপসর্গগুলি উপেক্ষা করে, আমাদের সাহায্য করার প্রস্তাবে রাজি হয় না, এমন কি মাঝে মাঝে আমরা হস্তক্ষেপ করতে গেলে বাধা পর্যন্ত দেয়।

উদাহরণস্বরূপ, আমি জানতাম যে আমার কাকা মাদকাসক্তির সাথে লড়াই করছেন। 2024 সালে আমরা তাঁর বাড়ি যাই। আমরা তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলি- তিনি মেনেও নিয়েছিলেন যে তাঁর স্বামীর নেশামুক্তির জন্য পুনর্বাসনে যাওয়া দরকার, কিন্তু তাঁর মা আমাদের বিশ্বাস করতে রাজি হননি। তারপর আমরা সরাসরি আমার কাকার সাথে কথা বলি। তিনি বলেন, “আমি হঠাৎ করে ছেড়ে দিতে পারব না। আমাকে ধীরে ধীরে পরিমাণ কমাতে হবে।” কয়েকদিন পরে, তিনি নিজেই আমাদের কাছে এসে পুনর্বাসন কেন্দ্রে যাওয়ার কথা বলেন। কিন্তু, এর জেরে তাঁর মায়ের সাথে আমার সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়। উনি এখনও মনে করেন যে সংগঠন তাঁর ছেলের নামে কুৎসা ছড়াচ্ছে।
পুনর্বাসনে যাওয়া বিপন্ন বহু তরুণই সফলভাবে সুস্থ হয়ে ওঠে এবং আসক্তির শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে তাদের জীবন পুনরায় শুরু করে। কিন্তু বাইরে থেকে সহায়তা দিয়েও আমরা অনেক কিছু করতে পারি।
এই মুহূর্তে আমরা পুরোপুরি বেসরকারি পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলির উপর নির্ভরশীল, এবং সেসব জায়গায় থাকার খরচ বহন পরিবারগুলিকে বহন করতে হয়। আমাদের এলাকায় সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে, কিন্তু তারা মাদক সম্পর্কে সচেতনতার উপর মনোযোগ দেয় না, যদিও ত্রিপুরায় মাদকাসক্তি একটি প্রধান স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যা।
ছাত্র সংগঠন বছরে দু’বার সচেতনতা শিবির আয়োজন করে এবং আমরা আমাদের সম্মিলিত জ্ঞান ব্যবহার করে অন্যদের শিক্ষিত করি। আমাদের এলাকার ওষুধের দোকানগুলিতে গিয়ে গিয়ে অনুরোধ করি প্রেসক্রিপশন ছাড়া সিরিঞ্জ বিক্রি না করতে। আমার ফার্মেসিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি আছে, তাই আমি ক্যাম্পে অংশগ্রহণকারীদের বলতে পারি যে মাদক কীভাবে আমাদের রক্তের সাথে বিক্রিয়া করে এবং মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করে।
আমাদের সমিতির প্রত্যেক সদস্য মাসে 10 টাকা করে অনুদান করেন, যা থেকে এই সচেতনতামূলক অভিযানের খরচ চলে। আমাদের হাতে আর্থিক সহায়তা থাকলে আমরা নিজেরাই পুনর্বাসন কেন্দ্র তৈরি করতে পারতাম। আমাদের যদি কেউ অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নথিভুক্তিকরণে সাহায্য করে, তাহলে আমরা তহবিলের জন্য আবেদন করতে পারি, বা অন্তত অন্তত আমাদের গ্রামের ভেতরে এবং বাইরে যাতায়াতের খরচটুক বহন করতে পারি।

নাইথক জামাতিয়া কিল্লার জামাতিয়া ছাত্র সমিতির প্রাক্তন সাংস্কৃতিক সম্পাদক।
আইডিআর নর্থইস্ট মিডিয়া ফেলো 2024-2025 অনুপমশর্মা-কে বলা বক্তব্যের অনুলিখন।
এই প্রবন্ধটি একটি অনুবাদ টুল ব্যবহার করে অনুবাদ করা হয়েছে। এটি সম্পাদনা করেছেন দ্যুতি মুখার্জি এবং পরিমার্জন করেছেন নীলাঞ্জন চৌধুরী।
—
আরও জানুন: ত্রিপুরা কেন বাঁশ শিল্পের প্রসার ঘটাতে সমস্যায় পড়ছে তা জানুন।
আরও কী করতে পারেন: লেখকের কাজ সম্পর্কে জানতে ও সমর্থন দিতে যোগাযোগ করুন naithokjamatiya123@gmail.com এই ঠিকানায়।
